নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হোসেন আলী খান হাসান, ট্রেজারার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ খানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্মাণ ও সংস্কার তদন্ত প্রতিনিধির রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ২১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া যায়।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, গত ১১ জানুয়ারী ঢাকা আইনজীবী সমিতির এনেক্স -২ এর সংস্কার কাজ , এনেক্স -১ এর উপর তলার নতুন রুম তৈরির কাজ এবং ব্যাংক বিল্ডিং এর আস্তরের কাজ ব্যাংক ভবনের ৬ষ্ঠ তলার ১৩টি রুম আইনজীবীদের জন্য নির্মাণ কাজের হিসাব নিকাশ বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বিল্ডিং সাব কমিটির উপস্থিত সকল সদস্যে বক্তব্য মতে ব্যাংক বিল্ডিং এবং এনেক্স -১ রুম নির্মানের বিষয়ে বিল্ডিং সাব-কমিটির সাথে আলোচনা না করে নির্মাণ কাজ করে সভাপতি-সম্পাদক- ট্রেজারার। অথচ বিল্ডিং এর সাব কমিটির সদস্য মো. মকবুল হোসেন ফকির , মো. মাসুদ আহমেদ তালুকদার নির্মানের পূর্বে মোখিকভাবে একাধিকবার সাব কমিটির অনুমোদন ব্যতীত ব্যাংক বিল্ডিং এর নির্মান কাজ না করার জন্য অনুরোধ জানালেও তা অমান্য করে। আর এতে ব্যাপক অনিয়মনের অভিযোগ তুলে বিল্ডিং এর সাব কমিটি।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদ ২০২০-২১ গত ১৮ই জানুয়ারি কার্যনির্বাহী সভায় ব্যাংক ভবনের টিনসেট নির্মাণ ও সংস্কারমূলক কাজের তদন্ত বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেখানে সবার সম্মতিক্রমে সমিতির সহ-সভাপতি ইমাম হোসেন মঞ্জুকে আহবায়ক, লাইব্রেরি সম্পাদক মো. আতাউর রহমান খান রুকুকে সদস্য সচিব ও দপ্তর সম্পাদক এইচ.এম.মাসুম, কার্যনির্বাহী সদস্য ইয়াছিন মিয়া, মেহেদী হাসান মেরিনকে সদস্য নিযুক্ত করে ৫ সদস্য বিশিষ্ঠ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
উক্ত তদন্ত কমিটি বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে গত ১৮ জানুয়ারী এক জরুরী সভা ডেকে আলোচনার মাধ্যমে ব্যাংক ভবনের ৬ষ্ঠ তলার নির্মাণ ও সংস্কার কাজ এবং এনেক্স- ১/২ এর নির্মান ও সংস্কার কাজের সঠিক কার্যক্রম ও হিসেব নির্নয়ের জন্য একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের সিদ্ধান্ত ও খরচের বিল বাউচার এবং হিসাব বিবরনীর মূল কপি তদন্ত কমিটি সংগ্রহ করে।
অতঃপর গত ৩১ জানুয়ারী ব্যাংক ভবনের ৬ষ্ঠ তলার টিনসেট নির্মাণ ও সংস্কার , এনেক্স -১/২ ভবনের নির্মাণ ও সংস্কার কাজ সম্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান সমূহকে বিল বাউচার ও কাজের ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটির সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। কিন্তু তদন্ত কমিটির সম্মুখে কেউই উপস্থিত হয়নি। এরপর গত ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত সাব কমিটি তাদের কার্যক্রম সুষ্ঠু এবং সঠিক ভাবে সম্পাদন করার লক্ষ্যে তদন্ত সাব কমিটি ও নিয়োগপ্রাপ্ত লিড অর্কিটেক্ট লিমিটেড এর ইঞ্জিনিয়ার মো. সাইফুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম যথা সময়ে উপস্থিত থেকে কার্যসম্পাদককারী প্রতিষ্ঠানের জন্য অপেক্ষা করে বিকেল ২ টায় ব্যাংক ভবনের বিল্ডিং এর টিনসেড ভবন ও সংস্কার কাজ , এনেক্স ১/২ এর নির্মাণ ও সংস্কার কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন ও মাপঝোক করেন।
এতে ব্যাংক ভবনের টিনসেড বিল্ডিং নির্মাণ ও সংস্কার কাজে তদন্ত সাব কমিটি ও ইঞ্জিনিয়ার মো. সাইফুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম এবং ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মোতালেব পরিদর্শন পরিক্ষা নিরীক্ষা ও হিসাব বিবরণীতে ব্যাপক গড়মিল পায় এবং বেশ কিছু ভাউচারে গ্রহীতার নাম , সাক্ষর ও নম্বর পাওয়া যায়নি।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী মোট খরচ হওয়ার কথা ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৪৪৭ টাকা কিন্তু সেখানে খরচ দেখানো হয়েছে ৩৫ লাখ ৪৮ হাজার ৫৬ টাকা। অর্থাৎ তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে ২১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৯ টাকার গড়মিল পেয়েছে।
এদিকে অর্থ আত্মসাৎ-এর এমন অভিযোগে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সদস্যরা।
উল্লেখ্য বর্তমান এই কমিটির মেয়াদ আজ ৭ই মার্চ শেষ হবে।